ডায়াবেটিস রোগের জন্য বিপদজনক ৭ টি ফল সম্পর্কে জানুন
ডায়াবেটিস রোগীর জন্য বিপদজনক ৭টি ফল নিয়ে কথা বলব আজকে আমরা আমাদের আর্টিকেলে। তাই ডায়বেটিস রোগীকে খাদ্য সম্পর্কে সচেতন থাক তে হবে। বিশেষ করে ফল সম্পর্কে। তাই ডায়বেটিস রোগীর বিপদজনক ৭টি ফল সম্পর্কে জানতে আমাদের আটিকেল টি ধর্য্য ধরে পড়ুন।
ফল খেলে বল বাড়ে এটা এক ধরনের প্রচলিত প্রবাদ বাক্য। তবে ডায়বেটিকস রোগীর জন্য সব ফল উপোকারী না ।কোন ফল গুলো উপকারী এবং কোন গুলো ক্ষতিকর তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা থাকছে আমাদের আটিকেলে।
পোস্ট সূচিপত্রঃ ডায়াবেটিস রোগীর জন্য বিপদজনক ৭টি ফল
- ডায়াবেটিস রোগীর জন্য বিপদজনক ৭টি ফল
- ডায়াবেটিস রোগীর জন্য বিপদজনক ফল কলা
- ডায়াবেটিস রোগীর জন্য বিপদজনক ফল আঙ্গুর
- ডায়াবেটিস রোগীর জন্য বিপদজনক ফল আম
- ডায়াবেটিস রোগীর জন্য বিপদজনক ফল কাঁঠাল
- ডায়াবেটিস রোগীর জন্য বিপদজনক ফল আনারস
- ডায়াবেটিস রোগীর জন্য বিপদজনক ফল তরমুজ
- ডায়াবেটিস রোগীর জন্য বিপদজনক ফল লিচু
- ডায়বেটিস রোগীর জন্য যে সব ফল উপকারী
- ডায়বেটিস রোগীর ফল খাওয়ার উপযুক্ত সময় ও পরিমাণ
- শেষকথাঃ ডায়বেটিস রোগীর জন্য বিপদজনক ৭টি ফল
ডায়াবেটিস রোগীর জন্য বিপদজনক ৭ টি ফল
ডায়াবেটিস রোগের জন্য বিপদজনক ফল কলা
কলা আমাদের দেশে সহজলভ্য ও জনপ্রিয় ফল। কিন্তু এতো প্রচুর চিনি ও কার্বোহাইড্রেট থাকে। যা ডায়বেটিস রোগীর জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। একটি মাঝারে আকারের কলাতে প্রায় ২২ থেকে ২৫ গ্রাম কার্বোটেড ও ১২ গ্রাম চিনি থাকে। কম বেশি সারা বছর বাজারে কলা পাওয়া যায়। একজন সুস্থ মানুষের প্রতিদিন কলা খাওয়া অনেক উপকার। কিন্তু ডায়াবেটিস রোগীর জন্য তা হতে পারে মরণঘাতক। তবে চিনি ও কার্বোহাইড্রেট এর মাত্রা পরীক্ষা করে সামান্য পরিমাণে কলা খাওয়া যেতে পারে।
কলায় আরো যে সব ক্ষতিকর দিক থাকে
- মাঝারি আকারের একটি কলায় ২০ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট থাকে
- গ্লাইসেমিক ইনডেক্স ৫১-৬০ যা মাঝারি থেকে উচ্চ।
- পাকা কলায় গ্লুকোজ ও ফ্রুকটোজ বেশি থাকে ।
- ডায়াবেটিকস রোগীর ইনসুলিন প্রতিক্রিয়া ধীর করে দেয়।
- ব্লাড সুগার লেভেল হঠাৎ করে বেড়ে যায়।
- ব্যায়াম না করলে কলার শর্করা চর্বিতে পরিণত হয়।
- জুস বা স্মুদি আকরে খাওয়া আরো ক্ষতিকর।
- প্রতিদিন কলা খাওয়ায় ডাইবেটিস নিয়ন্ত্রণে বাধা দেয়।
- অপরিপক্ক কলা কিছুটা ভালো হলেও সীমিত খেতে হিবে।
- চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কলা এড়ানোই নিরাপদ।
ডায়াবেটিস রোগীর জন্য বিপদজনক ফল আঙ্গুর
- প্রতি ১০০ গ্রাম আঙ্গুরে ১৫ থেকে ১৬ গ্রাম চিনি থাকে
- গ্লাইসেমিক ইনডেক্স ৫১-৬০।
- দ্রুত রক্তে শর্করা বাড়িয়ে দেয় ।
- আঙ্গুরের রস জুস আকারে খাওয়া আরও বিপদজ্জনক
- এতে থাকা ফুকটোজ ইন্সুলিন সংবেদনশীলতা কমায় ।
- প্রতিদিন আগুর খেলে ডাইবেটিক্স এর মাত্রা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় ।
- ব্ল্যাক গ্রেপে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শর্করা একই থাকে ।
- শুকনো আঙ্গুর অথাত কিসমিস সব চেয়ে ক্ষতি কর ।
- আঙ্গুরের বিকল্প হিসেবে ব্লুবেরি বা স্ট্রবেরি ভালো ।
ডায়াবেটিস রোগীর জন্য বিপজ্জনক ফল আম
আম মিষ্টি ফলগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়, কিন্তু ডায়াবেটিসে রোগীর জন্য এটা মারাত্মক ক্ষতিকর। ১০০ গ্রাম আমে প্রায় থেকে ১৫-১৮ গ্রাম চিনি থাকে। তাই ডায়াবেটিকস রোগীর আম খাওয়ার পর এর রক্তের গ্লুকোজের লেভেল হঠাৎ বৃদ্ধি পায়। ডায়াবেটিস রোগীদের উচিত ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী পাকা আম খাওয়া।
আমের ক্ষতিকর দিক ঃ
- প্রতি ১০০ গ্রাম আমে প্রায় ১৪ থেকে ১৬ গ্রাম চিনি থাকে।
- এটি দ্রুত রক্তে গ্লুকজের মাত্রা বাড়ায়।
- গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (GI) প্রায় ৫৫,বা ডায়াবেটিক্স রোগীর জন্য ঝুকি পূর্ণ ।
- অতিরিক্ত খেলে ইনসুলিন রেজিস্ট্যার বাড়াতে পারে
- বার কম থাকায় রক্তে শর্করা দ্রুত বৃদ্ধি পায়
- হজমের পর রক্তে গ্লুকোজ লেভেল দীর্ঘক্ষণ উচ্চ থাকে।
- সকালে খেলে ব্লাড সুগার তৎক্ষণাৎ বেড়ে যেতে পারে।
- পাকা আম জুস আকারে খাওয়া আরোও বিপজ্জনক।
- কখনো আমে চিনি ঘন হয়ে থাকে যা আরও ক্ষতিকর।
- ডায়াবেটিস রোগীর জন্য প্রতিদিন ১-২ টুকরোর বেশি আম খাওয়া ঠিক নয়।
ডায়াবেটিস রোগীর জন্য বিপদজনক ফল কাঁঠাল
কাঁঠালের সাথে আমাদের ঐতিহ্য জরিয়ে রয়েছে কারণ আমাদের জাতীয় ফল কাঁঠাল। গ্রীষ্মকালীন রসালো ফল হচ্ছে কাঁঠাল। আমাদের দেশের মানুষ গ্রীষ্মকালে কমবেশি কাঁঠাল খেয়ে থাকে। কিন্তু ডায়াবেটিসের জন্য কাঁঠাল খাওয়া মোটেই নিরাপদ না। কারণ প্রতি 100 গ্রাম কাঁঠালে প্রায় 20 গ্রাম কার্বোহাইড্রেট ও 15 গ্রাম চিনি থাকে। ডায়াবেটিস রোগী যখন কাঁঠাল খায় তখন এর ইনসুলিন এর চাহিদা বেড়ে যায় এবং রক্তের শর্করা উঠানামা করে।
কাঁঠাল আরো যে সব ক্ষতির কারণ ঃ
- প্রতি ১০০ গ্রাম কাঁঠালে প্রায় বিশ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট থাকে।
- এতে ফ্রুকটোজ ও গ্লুকোজের পরিমাপ খুব বেশি।
- ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স বাড়াতে পারে।
- GI স্কোর ৭৫ পর্যন্ত হতে পারে।
- রক্তে সুগার লেভেল হঠাৎ বৃদ্ধি পায়।
ডায়াবেটিস রোগীর জন্য বিপজ্জনক ফল আনারস
ডায়াবেটিসের রোগীর জন্য যে ৭ টি বিপদজনক ফল নিয়ে আলোচনা করব তার মধ্যে আনারস একটি। এদেশে প্রায় সারা বছর আনারস পাওয়া যায়। আনারসে গ্লাইসেমিক ইনডেক্স তুলনামূলকভাবে বেশি ( GI প্রায় ৬৬)। এতে প্রাকৃতিক চিনি ও ফুক্টোজ বেশি থাকে। এটি খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বেড়ে যেতে পারে।
আনারসের ক্ষতিকর দিকগুলো ঃ
- প্রতি ১০০ গ্রামে ১০ - ১৩ গ্রাম প্রাকৃতিক চিনি থাকে।
- ক্যালসিয়াম ইনডেক্স ৫৯-৬০।
- আনারস খেলে রক্তের সুগার দ্রুত বেড়ে যায়।
- জুস করলে ফাইবার নষ্ট হয়ে গ্লুকোজ দ্রুত শোষিত হয়।
- খালি পেটে খেলে রক্তে শর্করা হঠাৎ বেড়ে যায়।
- ডায়াবেটিস ওষুধের কার্যকারিতা কমাতে পারে।
- ইনসুলিন থেরাপি নেওয়া রোগীর জন্য আনারস বিপদজনক হতে পারে।
- প্রতিদিন খাওয়া উচিত নয়।
ডায়াবেটিস রোগীর জন্য বিবেচনা ফল তরমুজ
আমাদের আরেকটি উপকারী ফল আছে তরমুজ কিন্তু ডায়াবেটিস রোগীর জন্য এটা মোটেও উপকারী নয়। তরমুজে প্রচুর পরিমাণ পানি থাকলেও রিপ্লেসমেন্ট ইনডেক্স অনেক বেশি থাকে। কোথায় ডাইবেটিস রোগী যখন তরমুজ খায় তখন এর রক্তে সুগারের মাত্রা বেড়ে যায়। তাই ডায়াবেটিস রোগীর তরমুজের রস বা জুস খাওয়া সম্পূর্ণ অনিরাপদ।
তরমুজের ক্ষতিকর দিক ঃ
- GI প্রায় ৭২ যা অত্যন্ত উচ্চ
- এতে থাকা প্রাকৃতিক চিনি রক্ত দ্রুত প্রবেশ করে
- ডায়াবেটিস রোগীর রক্তে শর্করা হঠাৎ বেড়ে যেতে পারে।
- ফাইবার কম থাকায় গ্লুকোজ দ্রুত শোষিত হয়
- জুস আকারে খেলে আরও বিপদজ্জনক
- তরমুজ খাওয়ায় সুগার কন্ট্রোল নষ্ট হয়ে যায়।
- রাতে তরমুজ খেলে সুগার লেভেল বেড়ে যায়।
- তরমুজের বিকল্প হিসেবে আপেল বা পেয়ারা খাওয়া ভালো।
ডায়াবেটিস রোগের জন্য বিপদজনক ফল লিচু
লিচু ছোট ও রসালো হলেও এতে গ্লুকোজ ও ফ্রুকটোজের মাথা খুব বেশি। এক কাপ চিনে থাকে। প্রাইভেট ডায়াবেটিস রোগীর জন্য লিচু খাওয়া বারন তবে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী সুগার লেভেল চেক করে কিছু খেতে পারেন। তোর মনে রাখবেন লিচু যত মিষ্টি হবে ডায়াবেটিস রোগীর জন্য এটি তত বিপজ্জনক।
লিচুর ক্ষতিকর দিক ঃ
- প্রতি ১০০ গ্রামে প্রায় ১৭ গ্রাম চিনি থাকে।
- গ্লাসমিক ইনডেক্স ৫০-৭০।
- প্রাকৃতিক চিনি রক্তে দ্রুত শোষিত হয়।
- দিনে একবারের বেশি লিচু খেলে সুগার লেভেল দ্বিগুণ হয়ে যায়।
- ইনসুলিনের কার্যক্ষমতা কমে যায়।
- ফাইবার কম থাকায় রক্তে গ্লুকোজ বাড়ে।
- গরমকালে বেশি খাওয়া ডায়াবেটিক শকের ঝুঁকি বাড়ায়।
- কৃত্রিমভাবে সংরক্ষিত লিচু আরও ক্ষতিকর।
ডায়াবেটিকস রোগীর জন্য যে সব ফল উপকারী
- আপেল
- পেয়ারা
- কমলা বা মাল্টা
- বেরি জাতীয় ফল
- পেয়ারার মতো উঁচু ফাইবারযুক্ত ফল



এএন আইটি কেয়ার নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url